বিদ্যালয়ের ইতিহাস
১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে উপশহর এলাকার কয়েকজন বিদ্যানুরাগী ব্যক্তিবর্গের প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়ের শুভসূচনা হয়। তাদের মধ্যে ছিলেন প্রফেসর মোঃ শামসুল হক, প্রফেসর মোঃ এরশাদ আলী, মোঃ আব্দুর রউফ ও অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ। প্রথমে প্রধান শিক্ষক হিসেবে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হায়দার আলীকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়। এর কিছু দিন পর মোঃ মাজহার হোসেন কে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর ১৯৮০ সালে জনাব মোঃ আব্দুর রউফ এর সহযোগীতায় তৎকালীন ভুমিপ্রতি মন্ত্রী জনাব জমির উদ্দিন সরকার হাউজিং এস্টেট হতে ১.৩৮৬০ বা ৮৪ কাঠা জমি রাজশাহী স্যাটেলাইট টাউন হাই স্কুলের নামে বরাদ্দ করেন এবং রাজশাহী জেলা প্রশাসক মহাদয়ের স্বাক্ষরে বিদ্যালয়ের নাম রেজিস্ট্রি দেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড হতে ১৯৭২ সালে জুনিয়র বিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি প্রাপ্ত হয়। ১৯৭৩ সালে ৯ম এবং ১৯৭৫ সালে বিজ্ঞান বিভাগের অনুমতি পায়। যুগের চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে ১৯৮১ সালে বাণিজ্য বিভাগ এবং ২০০১ সালে কম্পিউটার বিষয়ে স্বীকৃতি নেওয়া হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে কম্পিউটার ল্যাব,ডিজিটাল ক্লাস রুম, বিজ্ঞানাগার এবং সমৃদ্ধ লাইব্রেরি রয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হিসেবে জনাব মোঃ মাজহার হোসেন ০১-১০-১৯৬৯ ইং হতে ০৫-০৪-১৯৯৮ ইং পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে জনাব মোঃ তারিকুল ইসলাম ১৯-০৯-২০১০ ইং হতে কর্মরত আছেন। বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ১৭ জন। কর্মরত সকল শিক্ষক-কর্মচারীর, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগীতায় বিদ্যালয়টি একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠেছে।
উল্লেখ্য অত্র এলাকায় অধিকাংশ জনগন বিদ্যানুরাগী হওয়ায় সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কার্যক্রম দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। বর্তমানে কর্মরত শিক্ষক কর্মচারীগণ খুবই আন্তরিক ফলে বিদ্যালয় পড়ালেখা,খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে বিদ্যালয়টি ক্রমান্বয়ে উন্নতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বিদ্যালয়টিতে ৬ষ্ঠ হতে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। বিজ্ঞান,মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগ চালু রয়েছে। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৬০ জন। এম.পি.ও ভুক্ত শিক্ষক সংখ্যা ১২ জন। সহকারী গ্রন্থাগারিক ০১ জন, ৩য় শ্রেণীর কর্মচারী ০১ জন এবং ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী ০২ জন এবং খণ্ডকালীন ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী ০২ জন। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল হতে প্রাপ্ত ০৮টি কম্পিউটার ০১টি ল্যাপটপ এবং অপর একটি প্রজেক্টর দ্বারা ডিজিটাল ক্লাস রুম করা হয়েছে। যাতে নিয়মিত ডিজিটাল কন্টেন্ট ব্যবহার করে ক্লাস নেওয়া হয়। তাছাড়া সমৃদ্ধ লাইব্রেরী এবং বিজ্ঞানাগার রয়েছে। বিদ্যালয় সংলগ্ন প্রায় চার হাজার বর্গমিটারের একটি খেলার মাঠ রয়েছে। উক্ত মাঠে শরীর চর্চা শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে নিয়মিত খেলাধুলার অনুশীলন করা হয়। বিদ্যালয়ের ছাত্রদের নিয়ে আন্তঃ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট খেলা হয়। ফলে প্রত্যেক বছরে বিকেএসপি সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্ররা অংশ গ্রহন করে থাকে। বিদ্যালয়টিতে ৪টি গ্রুপে ৮জন করে মোট ৩২ জনের একটি স্কাউট দল রয়েছে। তারা নিয়মিত জাতীয় ও সামাজিক বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ গ্রহন করে।
তাছাড়া জাম্বুরী, বিদ্যুৎ ক্যাম্প ও বিভিন্ন স্কাউট অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন করে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন রচনা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করে এবং সফলতা অর্জন করে। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,বার্ষিক ভোজ,শিক্ষা সফর,শহীদ দিবস, জাতীয় শিশু দিবস সহ সকল জাতীয় দিবসগুলোতে চিত্রাংকন,রচনা প্রতিযোগিতা ও বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়জোন করা হয়। সার্বিক মূল্যায়নের দিক থেকে বিদ্যালয়টি একটি আদর্শ ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুনাম অর্জন করেছে।